নবাবগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধে তিন নারী আহত

 নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি.

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় জমি সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধে তিন নারী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বাহ্রা গ্রামের নিজ বাড়িতে হামলা চালালে তারা আহত হয় বলে জানিয়েছেন। আহতরা হলেন- ওই এলাকার মো. মফিজুর রহমানের স্ত্রী আলেয়া রহমান (৫০), মেয়ে সোনিয়া রহমান শারমিন (৩৩) ও মফিজুরের ছোট বোন ফাতেমা বেগম (৫০)। এদের মধ্যে গুরুতর আহত একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত শারমিন হাসপাতালে কেঁদে কেঁদে জানান, আমার বাবা খুলনায় চাকুরী করায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে আমরা সেখানেই বসবাস করছি। মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়ি বাহ্রাতে বেড়াতে আসি। এখানে আমাদের অনেক জায়গা সম্পত্তি রয়েছে। আমাদের অবর্তমানে আমার ফুপু ও ছোট চাচা তোতা মিয়া সেগুলোর দেখাশোনা করতেন। গত কয়েক বছর ধরে আমাদের সম্পত্তি বুঝে নিতে চাইলে আমার চাচাসহ তার পরিবার সেগুলো তাদের বলে দাবি করেন। আমাদের সকল কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও তারা কোনো ভাবেই আমাদের সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে রাজি হয়নি। আমরা বিষয়টি প্রথমে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, তারপর জাতীয়পার্টির এমপি সালমা ইসলাম ও থানার ওসিকে জানাই। তারা পৃথকভাবে কয়েকবার বিষয়টি সমাধানের জন্য বসলে কাগজপত্র দেখে তারা আমাদের পক্ষেই রায় দেন। কিন্তু তাতেও তারা না মানলে আইনের সাহায্য নেই। ইতিমধ্যে তিনটি মামলায় আমরা জয়ী হয়েছি। বর্তমানে আরও একটি মামলা চলমান রয়েছে। এ সংক্রান্ত বিরোধের পর থেকেই তারা আমাদের বিভিন্ন সময়ে মেরে ফেলার হুমকিসহ নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিল। এমতাবস্থায় নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা থানায় পৃথকভাবে আরও দুইটি সাধারণ ডায়েরী করলে পুলিশ আমার চাচা তোতা মিয়া, তার স্ত্রী নাজমা বেগম ও বড় ছেলে নাহিদকে আমাদের করা চলমান মামলায় গত বুধবার গ্রেপ্তার করলে বৃহস্পতিবার তারা জামিনে বের হয়। জামিনে বের হওয়ার পর থেকেই তাদের সাহস আরও অত্যাধিক বেড়ে যায়। তারা বলে বেড়ায় খুন করলে বা মারধর করলে কি হয়। পুলিশ একদিন ধরবে আর আরেকদিন জামিনে বের হবো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশী চাচাতো ভাই হালিম আমাদের বাড়িতে আসে। এসময় আমার চাচা-চাচী, চাচাতো ভাই নাহিদ, নাদিম, নাজমুল ও চাচাতো দুই ভাইয়ের বউ এসেছিল। তারা আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলতে এসে পুরনো বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা তোলেন। কথার একপর্যায়ে তারা ধাঁরালো অস্ত্র, ক্রিকেট ব্যাট ও লাঠিসোটা দিয়ে আমার মায়ের ওপর অর্তকিত হামলা চালায়। এসময় আমি ও আমার ফুপু তাদের থামাতে গেলে তারা আমাদেরও মারধর করে আহত করেন। হামলায় মারধরে ও ধাঁরালো অস্ত্রের কোপে আমার মা গুরুতর আহত হয়েছেন। এদিকে আমার চাচাতো কাতার প্রবাসী নাদিম ও সৌদী আরব প্রবাসী নাজমুলের ছুটি আজই শেষ। তারা আজ বিদেশে চলে যাবেন। হয়তো এতোক্ষণে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনাও হয়ে গেছেন। সবকিছু তারা পরিকল্পনা মতো করেছেন বলেও অভিযোগ করেন শারমিন। নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আহত তিনজনের মধ্যে গুরুতর আহত আলেয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও বাকিদের চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, আহত শারমিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment